৳ ৬৮০ ৳ ৫১০
|
২৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
লেখকের কথা-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারির কথাসাহিত্যিক হিসেবে ড. শামসুদ্দীন আবুল কালাম একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি আমার একমাত্র মামা, বিষয়টি আমার অহংকার, গর্ব এবং উত্তরাধিকারের। জন্ম থেকেই দেখেছি তার সাহিত্যকর্ম এবং ব্যক্তিজীবনের চরম বেদনাদায়ক অধ্যায় বাংলা সাহিত্যের অনুসন্ধিৎসু পাঠকের কাছে আগ্রহের বিষয় ছিল। মামা মারা যাবার পরে আমার মায়ের ইচ্ছায় আমি পিএইচ.ডি করার চিন্তা করি।আমার মা তার ভাইয়ের অত্যন্ত আদরের ছোটবোন ছিলেন। মামার সাহিত্যকর্ম এদেশের মানুষের কাছে উল্লেখযোগ্যভাবে আলোচিত না হলে মা খুব কষ্ট পেতেন এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন। এ দেশের বড় বড় পত্রিকার সাহিত্যপাতায় প্রকাশিত বাংলা সাহিত্যের বড় বড় সমালোচক এবং গবেষকদের সমালোচনামূলক নিবন্ধ এবং গবেষণাগ্রন্থ তিনি পড়ে দেখতেন। কেউ কেউ মামার নাম উল্লেখ না করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিজের ঘরে, চায়ের আসরে অথবা নিজ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে এটা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন। আমি মায়ের সেই কষ্টটা বুঝতাম। একদিন তিনি আমাকে মামার কথাসাহিত্যের বিষয়ে গবেষণা করতে বললেন, যা আমার কাছে মা আদেশ করেছেন বলে মনে হয়েছে। শামসুদদীন আবুল কালামের বিষয়ে সে সময় গবেষণা করা ছিল অসম্ভব প্রায়। কারণ লাইব্রেরীতে তার লেখা বই, বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা সংগ্রহ করা বেশ দুরূহ বিষয় ছিল। কেউ তার বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারতেন না যেহেতু তিনি (শামসুদদীন আবুল কালাম) প্রায় ৪০ বছর ধরে ইটালীর রোমে প্রবাসজীবন যাপন করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি এবং গবেষণা করার শর্তসমূহ আমার কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে তুলনামূলকভাবে সহজ মনে হওয়াতে সেখানেই ভর্তি হয়ে কাজ শুরু করি। ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের ৫০০০ টাকা হিসেবে মাসিক বৃত্তি বা অনুদান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পর্যায়ক্রমে তিন বছরের ছুটির অনুমোদন লাভ করি । প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে ২০০৬ এর মাঝামাঝি সময়ে বিমুক্ত হয়ে তখন থেকে কাজ শুরু করি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার মা ২০০৮ এর জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে হঠাৎ মারা যান। এতে আমার সমস্ত উৎসাহ উদ্দীপনা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এর মধ্যে ২০০৮ এ আমি প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে ইডেন কলেজে পদায়ণ লাভ করি, জয়েন করে ইউনিভার্সিটি ফেলোশিপের বৃত্তিসহ ছুটি ত্যাগ করে সেপ্টেম্বর মাসে জয়েন করে কর্মরত অবস্থায় পিএই্চ.ডির কাজটি সুসম্পন্ন করার চেষ্টায় নিয়োজিত থাকি। ইতোমধ্যে ২৮ আগস্ট মাস ২০১১সালে আমার ছোট ভাই যাত্রাবাড়ী থেকে হারিয়ে যায়, যাকে আজও ফিরে পাইনি। ২০১৩র জানুয়ারি মাসের ১৫তারিখে ঢাকার উত্তরায় আমার সর্বকনিষ্ঠ ভাই আততায়ীদের উপর্যুপরি ছুরির আঘাতে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। এই সমস্ত দেখেশুনে আমার আর একটি ভাই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পারিবারিক এই বিষয়গুলি পিএইচ.ডির এই অভিসন্দর্ভ প্রকাশে আমাকে নিঃস্পৃহ করে তোলে। ১২ বছর পরে পারিবারিক রাহুগ্রস্ত অবস্থার সমাপ্তি হলে এবার আমার কর্মজীবনের সমাপ্তিকালে এই অভিসন্দর্ভটিকে আলোর মুখে আনার ইচ্ছে প্রকাশ করলে অনুপ্রাণনের কর্ণধার আবু মোহাম্মদ ইউসুফ ভাই সানন্দে গ্রন্থটি প্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শামসুদদীন আবুল কালামের কন্যা ক্যামেলিয়ার কাছে অসংখ্য অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি আছে যা এখনও প্রকাশিত হয়নি। শামসুদদীন আবুল কালামের একমাত্র জামাতা জনাব এ বি মঞ্জুর রহিম ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব এবং তৎকালীন সময়ের একজন রাষ্ট্রদূত। ২০০৫ এ তিনি জার্মানির রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এখন তিনি কানাডার ক্যালগারিতে অবস্থান করছেন।
শামসুদদীনের কথাসাহিত্য: জীবনবোধ ও শিল্পরূপ শিরোনামের অভিসন্দর্ভের জন্য ২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে ডক্টর অব ফিলজফি উপাধি প্রদান করে আমাকে সম্মানিত করেছে। আমার গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আমার শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ড. সৌদা আখতার। পরীক্ষা পরিষদের সভাপতি এবং পরীক্ষক ছিলেন আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. সৈয়দ আকরাম হোসেন। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শিপ্রা দস্তিদার ছিলেন আমার পরীক্ষক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দানীয়ুল হক স্যারের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তিনি এ বিভাগে ভর্তি থেকে শুরু করে সব সময় গবেষণার অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে কাজটি সুসম্পন্ন করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সার্বিক সহযোগিতা বিশেষভাবে স্মরণ করার মত। গবেষণার সময়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, ( বিশেষ অনুমতিক্রমে)। বাংলা একাডেমী, গুলশানের ইন্ডিয়ান লাইব্রেরী, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আজিমপুর লাইব্রেরী এবং ইডেন কলেজের সমৃদ্ধ লাইব্রেরী ব্যবহার করেছি। অভিসন্দর্ভের সার্বিক মুদ্রণের দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম। আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম মজনুর সহযোগিতা, সহনশীলতা এ কাজটি শেষ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করেছে। আমার দুইজন সন্তান তাদের শিক্ষা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমার মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সেজন্য আমি আসলেই অনুতাপ করছি। ব্যক্তিগত জীবনের নানা সমস্যা এবং সীমাবদ্ধতার পরেও ড. শামসুদ্দীন আবুল কালামের কথাসাহিত্যের উপর এই গবেষণাকর্মকে আমার শ্রদ্ধেয় পরমগুরু অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকরাম হোসেন স্যার মৌলিক এবং আঁকর গ্রন্থ হিসেবে মূল্যায়ণ করেছেন।এটা আমার পরিশ্রমের একটা পরিপূর্ণ স্বীকৃতি এবং সম্মান বলে আমি মনে করি। বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্পের ইতিহাসে শামসুদ্দীন আবুল কালামের গল্প একটি অসাধারণ উচ্চতায় অবস্থান করে আছে, বিশেষ করে তার পথ জানা নাই গল্পটি যুগে যুগে এই দেশের সমাজবাস্তবতা এবং রাজনৈতিক চেতনার একটি উজ্জ্বল স্বাক্ষর যা বাংলা সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন । এই অভিসন্দর্ভ অনুসন্ধিৎসু শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি।
Title | : | জীবনবোধ ও শিল্পরুপ |
Author | : | জাহিদা মেহেরুননেসা |
Publisher | : | অনুপ্রাণন প্রকাশন |
ISBN | : | 9789849741770 |
Edition | : | 1st Published, 2023 |
Number of Pages | : | 312 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
অধ্যাপক ড. জাহিদা মেহেরুননেসা ( মিনু ) জন্মসূত্রে একটি সমৃদ্ধ সাহিত্যিক আবহে বেড়ে ওঠেন, যেহেতু তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন মামাবাড়ি বরিশালের ঝালকাঠিতে। মামা একসময়ের জীবনানন্দ দাশের প্রিয় ছাত্র বাংলা কথাসাহিত্যে সাড়া জাগানো প্রখ্যাত লেখক ড. শামসুদদীন আবুল কালাম কাঞ্চন। বাবা পটুয়াখালির মকবুল আহমেদ প্রথম জীবনে ছিলেন শিক্ষক, পরবর্তী সময়ে তিনি সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করেন। মা লেখিকা মমতাজ বেগম দুলালী। জাহিদার আট ভাইবোনের প্রায় প্রত্যেকেই গুণী এবং প্রতিভাবান। স্বামী শফিকুল ইসলাম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, অগ্রণী ব্যাংকের একজন সফল কর্মকর্তা এবং নেতা। তিনি ১জন পুত্র সন্তান এবং ১জন কন্যাসন্তানের জননী। বাবার চাকুরীসূত্রে প্রায় জন্ম থেকেই জাহিদা ঢাকা শহরের যাত্রাবাড়িতে শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনের উজ্জ্বল সময়গুলি অতিবাহিত করেন, ঢাকার তৎকালীন বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কামরুন্নেছা সরকারী উচ্চ বা্লিকা বিদ্যালয়, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বিসিএস পাশ করে ১৯৯৬তে সরকারি মহিলা কলেজ বরিশালে জয়েন করেন। পরবর্তী সময়ে সরকারি বাঙলা কলেজে ১০ বছর শিক্ষকতাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ফেলোশীপসহ ৩ বছর ছুটি পেয়ে মামা শামসুদদীন আবুল কালামের কথাসাহিত্য বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অধ্যয়ন করার জন্য সরকারী অনুমোদন লাভ করেন। তিনি তাঁর পিএইচ.ডি তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. সৌদা আখতারের প্রাজ্ঞ নির্দেশনায় অভিসন্দর্ভ রচনার কাজটি সুসম্পন্ন করেন। ২০০৮ এর সেপ্টেম্বরে ইডেন মহিলা কলেজের বাংলা ভাষাও সাহিত্য বিভাগে জয়েন করার পর অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন ২০১১র এপ্রিলে। ইতোপূর্বে পলল প্রকাশনী থেকে ১ম কাব্যগ্রন্থ অনুরণন (২০০৬) প্রকাশিত হয়। সালাউদ্দিন বইঘর থেকে ২য় কাব্যগ্রন্থ আত্মোৎসারণ অনুবাদসহ ( elevation of the soul ) প্রকাশিত হয় ২০১০ এ । এদিক থেকে কবি হিসেবেও কবিমহলে জাহিদার একটি পরিচিতি রয়েছে।
If you found any incorrect information please report us